ফ্যাশন ডিজাইনার ও প্রশিক্ষক, ফরিদপুর
২০০১ সাল। তখন মাত্র স্কুলে পড়েন দিবা। ফ্যাশন ডিজাইনিং তার প্যাশন ছিল ঠিক সেই সময় থেকেই। ডিজাইনের উপর ডিপ্লোমা করে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের মতো করে কাজ করতেন। অল্প কিছুদিনের ভেতরই দেশে-বিদেশে তার কাজের প্রসার বাড়তে থাকলো। এরই স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ৩ মাসের একটা ডিজাইন ফেলোশিপ পেলেন তিনি। কিন্তু পরিবারের সম্মতি না থাকায় যেতে পারলেন না। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশের বিভিন্ন ফ্যাশন শোতে অংশ নিতে থাকেন। ২০০৬ সালে শুরু করেন নিজের বুটিক হাউজ ‘BOABA Fashion’। বর্তমানে এর পাশাপাশি শিক্ষকতাও করছেন উত্তরা ইউনিভার্সিটি’তে। সবকিছু ভালোই চলছিল। হঠাৎ ২০১৭ সালে পার্শিয়াল প্যারালাইজড হয়ে পড়েন। এসময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন দুস্থ, শারীরিকভাবে অক্ষম ও দরিদ্র নারীদের পাশে দাঁড়ানোর। শুরু করেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘ডেইজি ফাউন্ডেশন’-এর যাত্রা। নিজের মায়ের নামে গড়ে তোলা এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি গ্রাম পর্যায়ের দুস্থ নারী ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, যেন তারা স্বাবলম্বী হয়ে নিজের উদ্যোগ শুরু করতে পারে। শুধু দেশেই নয়, বরং বিভিন্ন সংস্থার সাথে আফ্রিকা, ইন্ডিয়া, নেপাল ইত্যাদি দেশে গিয়েও নারীদের হাতের কাজ ও জুয়েলারি তৈরির উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন দিবা। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে অনলাইনেও প্রশিক্ষণ দিতেন। এতকিছু একসাথে করার পথ মোটেও সহজ ছিল না। অনেক প্রতিবন্ধকতাই এসেছে কিন্তু থেমে থাকেননি কখনো। কারণ তিনি মনে করতেন একজন শিক্ষকের কাজই শেখানো এবং অন্যদের উৎসাহ দেয়া। আজ তার কাজই তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিত করে তুলেছে, পেয়েছেন অসংখ্য অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা। বাবার পরিচয়ই একসময় তার পরিচয় ছিল। কিন্তু এখন দেশে-বিদেশে সবাই তাকে ফারাহ দিবা হিসেবেই চেনে ও সম্মান করে।